• শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
  • ভর্তি পরীক্ষা ২০২৪
  • মহান বিজয় দিবস ২০২৩ উৎযাপন
ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন
অধ্যক্ষ ও সদস্য সচিব
ডোরস বিদ্যালয়।

শিক্ষা মানুষের অন্তরচোখ খুলে দেয়। আমরা মানুষ হিসাবে জন্মগ্রহন করলেও পারিবারিক, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহন ব্যতিত বেড়ে উঠা গোটা মানব সভ্যতার ক্রমবর্ধমান বিকাশের পথে অন্তরায়। শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে মানুষ শিষ্টাচার শেখে এবং দায়িত্বশীল আচরণ করে। জীবনকে উপভোগ করতে চাইলে শিক্ষা অর্জনের বিকল্প নেই। শিক্ষা আমাদের অন্তর্নিহীত শক্তিকে জাগ্রত করে ও অর্থনৈতিক মুক্তি দেয়। শিক্ষা হলো জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া যেখানে একজন মানুষ জীবনের সূচনা হতে ক্রান্তি অবধি শিখতে থাকে। শিশুর শিক্ষার হাতেখড়ি পরিবার থেকে শুরু হয়। প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি হতে শিশুর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার শুরু। শিশুর সামাজিক বিকাশে প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা শিশুদের শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধিভিত্তিক, ভাষাগত ও সামাজিক বিকাশের মজবুত ভিত্তি তৈরি করে। প্রাথমিক তথা প্রথম শ্রেণি হতে পঞ্চম শ্রেণি পর্য়ন্ত শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে শিশুর শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, নৈতিক, মানবিক, নান্দনিক,আধ্যাতিক ও আবেগিক বিকাশ সাধন হয়। যথাযথ শিক্ষা গ্রহনের মাধ্যমে শিশুরা দেশাত্মবোধে, বিজ্ঞানমনস্কতায়, সুজনশীলতায় ও উন্নত জীবনের স্বপ্ন দর্শনে উদ্বুদ্ধ হয়। মাধ্যমিক পর্য়ায়ে বর্তমান শিক্ষাক্রম সাজানো হয়েছে দক্ষতা ভিত্তিক জনবল তৈরির মানসে। মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য হলো, শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশের মাধ্যমে মানবিক, সামাজিক ও নৈতিক গুনসম্পন্ন জ্ঞানী, দক্ষ, যুক্তিবাদী, বিজ্ঞানমনস্ক ও সৃজনশীল দেশপ্রেমিক জনসম্পদ সৃষ্টি। একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বহু দিনের। ১৯৯৬ সালের কথা, শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষ‌ পদার্থ বিজ্ঞানের ছাত্র। আমার প্রাথমিক, মাধ্যমিক সম্পন্ন করেছি গ্রাম থেকে আর উচ্চ মাধ্যমিক জেলা সদরের সরকারি কলেজ থেকে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতেই মনে হয়েছে সরকারের বিবিধ কার্য়ক্রম সত্বেও বাংলার গ্রামীণ জনপদে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানে ঘাটতি রয়েছে।বিশ্বাস ছিল, একটি এলাকায় শিক্ষার উৎকর্ষতা অর্জনের জন্য প্রাথমিক শিক্ষার ভিত্তি মজবুত হওয়া বাঞ্চনীয়। প্রাথমিক পর্য়ায়ে যদি শিশুরা যথাযথ শিক্ষার পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হয় তথা অর্জন উপযোগী যোগ্যতা অর্জন না করে তবে মাঘ্যমিক পর‌্যায়ে তাদেরকে পড়াশুনায় মনযোগী করা প্রায় অসম্ভব। এই অনুধাবন থেকে নিজ এলাকা বরহানগঞ্জ বাজার কেন্দ্রিক আমার অত্যন্ত স্নেহভাজন মো: রেজাউল হাসান, শংকর চন্দ্র দে, অনুজ চন্দ্র দে এবং আবু জাফর নয়ন সহ আরও সমমনা কয়েকজন শিক্ষাণুরাগীর সমন্নয়ে ২০১১ খ্রীষ্টাব্দে ডোরস বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে পাঠদান শুরু করি। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো, পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জনে শিক্ষার্থীদের সর্বাত্বক সহযোগীতা করা। পরীক্ষায় ভাল ফলাফল নির্ভর শিক্ষায় আমরা বিশ্বাস করি না। আমরা মনে করি, জাতীয় শিক্ষাক্রমে সংযুক্ত বইগুলো অত্যন্ত মানসম্মত, পাঠ্যবইগুলো থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান যুগোপযোগী এবং মানসম্মত।যে কোন ধরনের গাইড বইকে সম্পূর্ণ না।গাইড বইগুলো শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা নষ্ট করে এবং শিক্ষার্থীরা সমস্যার মুখোমুখি হয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করার মতো সাহস অর্জনে পিছিয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠার প্রথম থেকেই যথেষ্ট সুনামের সহিত শিক্ষা কার‌্যক্রম চলমান। পরবর্তীতে ২০১৬ খ্রীষ্টব্দে ষষ্ঠ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির মাধ্যমে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কার‌্যক্রম শুরু হয়। বিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষা কারিকুলামে ইংরেজি ভাষা এবং বিজ্ঞানের উপর বিশেষ নজর দেয়ার চেষ্টা করি। নবম শ্রেণিতে শুধুমাত্র বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি করি। ২০২১ খ্রীষ্টাব্দে প্রথম ব্যাচ এস.এস.সি. পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। আলদহামদুলিল্লাহ, শিক্ষার্থীরা খুব ভাল ফলাফল করে এবং পরবর্তি বছরগুলোতে ভাল ফলাফল অব্যহত আছে। আমাদের প্রচেষ্টা শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী হিসাবে গড়ে তোলা, যাতে ওরা স্পষ্টভাষী, সাহসী, বিনয়ী, সৎ, মননশীল এবং মানবিক মানুষ হিসাবে গড়ে উঠে।একটি প্রতিষ্ঠানকে মানুষ তৈরির ক্ষেত্র হিসাবে গড়ে তুলতে হলে দক্ষ শিক্ষক যেমন দরকার সেই সাথে প্রয়োজন দায়িত্বশীল অভিবাবক। আমাদের শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অভিবাবকদের সচেতনতা কার‌্যক্রম চলমান ।শেষত, ডোরস বিদ্যালয়ের পরিচালনার দায়িত্বে যুক্ত আমরা বিশ্বাস করি, প্রতিটি শিশুর মধ্যে অপার সম্ভাবনা রয়েছে।শিশুর শিক্ষার শুরুতে বা কোন পর‌্যায়ে এলোমেলো হলে বুঝতে হবে পারিবারিক. সামাজিক কিংবা প্রতিষ্ঠানের কারণে হচ্ছে। সমস্যা উদঘাটন করে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে।প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মধ্যে উদ্দিপনা সৃষ্টি করতে এবং শিক্ষাকে আনন্দদায়ক করে তাদের মনোজগদে স্বপ্নবুননের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আত্মসম্মান সম্পন্ন মানুষ হিসাবে গড়ে তুলব ইনশাআল্লাহ।

t